পুঁজিবাদ জনগণকে কিভাবে বোকা বানায়, তার একটি প্রাকটিক্যাল উদাহরণ দেখি চলুন। বাংলাদেশের একজন এমপি প্রতিমাসে নানান সুবিধা ভোগ করে থাকে। গাড়ি-বাড়ি, বেতন, ভাতা—সবই পায় তারা। বিবিসি বাংলা এর একটি হিসাব দিয়েছে। হিসাবটা এমন :

১. মাসিক বেতন ৫৫,০০০ টাকা

২. নির্বাচনী এলাকার ভাতা প্রতিমাসে ১২,৫০০ টাকা

৩. সম্মানী ভাতা প্রতিমাসে ৫,০০০ টাকা৪. শুল্কমুক্তভাবে গাড়ি আমদানির সুবিধা৫. মাসিক পরিবহন ভাতা ৭০,০০০ টাকা

৬. নির্বাচনী এলাকায় অফিস খরচের জন্য প্রতিমাসে ১৫,০০০ টাকা

৭. প্রতিমাসে লন্ড্রি ভাতা ১,৫০০ টাকা

৮. মাসিক ক্রোকারিজ, টয়লেট্রিজ কেনার জন্য ভাতা ৬,০০০ টাকা

৯. দেশের অভ্যন্তরে বার্ষিক ভ্রমণ খরচ ১২০,০০০ টাকা

১০. স্বেচ্ছাধীন তহবিল বার্ষিক পাঁচ লাখ টাকা

১১. বাসায় টেলিফোন ভাতা বাবদ প্রতিমাসে ৭,৮০০ টাকা

১২. সংসদ সদস্যদের জন্য সংসদ ভবন এলাকায় এমপি হোস্টেল আছে

১৩. প্রতিবছর চার কোটি টাকা বরাদ্দ।

তাহলে একজন সাংসদের বার্ষিক আয় কত দাঁড়াল?

প্রায় ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। (এর বাইরে আরও কত-কী আছে, তা তো সবাই জানে) এটা দেখে স্বভাবতই গরিব মানুষ হতবাক হয়ে যাবে। বিশেষ করে যেসব স্বল্প আয়ের মানুষের ভোটে সাংসদ নির্বাচিত হতে হয়, তারা তো আঁতকে উঠবে। মানতে চাইবে না কোনোভাবেই। তাই এদেরকে ধোঁকা দেওয়া জন্যে পুঁজিবাদ নিয়ে এসেছে জিডিপি-জিএনপি নামক কৌশল। আপনার আর একজন এমপির ইনকাম যাই হোক না কেন, দুজনকেই সমান বানানোর শয়তানি চাল তার জানা আছে। সে বলবে, “ভাইসব! আপনারা যা দেখতেছেন, আসল ঘটনা সেটা না। আসলে বছর শেষে আমরা সবাই ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ইনকাম করি। আমাদের মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ ডলার। তাই এটা নিয়ে রাজনীতি করার কিছু নেই।”

পুঁজিবাদ খুব সুন্দর একটি বুঝ দিয়ে দেবে। এতে করে সাপও মরবে, লাঠিও ঠিক থাকবে।